কিশোর উপযোগী গল্পের বই ‘পনির ও তিতুমামু’। এ বইটি লিখেছেন খায়রুল আলম সবুজ। বইটিতে দুটি গল্প রয়েছে। প্রথম গল্প পনির ও তিতুমামু এবং দ্বিতীয় গল্প কাবুতা। দুটি গল্প দুটি আলাদা বিষয় নিয়ে লেখা হয়েছে। প্রথম গল্পে পনির ও তিতুমামু সম্পর্কে মামা-ভাগ্নে। আমরা সবাই মামা-ভাগ্নের গল্প পড়তে ভালোবাসি।
পনিরের দাদাভাই একজন সমাজসেবক। তিনি মানুষের বিপদে-আপদে পাশে থেকে তাদের নানাভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করে থাকেন। দাদুর ঘরে তাই সারক্ষণই মানুষের ভিড় লেগে থাকে। এসব দেখে পনির অনুপ্রাণিত হয়। দাদাভাইকে নিয়ে তার গর্বও কম নেই।
যৌথ পরিবারে বড় হওয়া পনির সবার সাথে থেকে বেশ আনন্দ পায়। বর্তমানে শহুরে জীবনে আমরা তেমন আর যৌথ পরিবার দেখতে পাই না। যে যার মধ্যে আলাদা আলাদা জীবন যাপন করতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি। আমাদের পাশের ফ্ল্যাটে কে থাকে তাও আমরা খোঁজ নিয়ে দেখি না। এভাবে আমরা যেন দিন দিন নিঃসঙ্গ হয়ে পড়ছি।
পনিরের স্কুলে ক্যাপ্টেন হওয়ার নির্বাচন হয়েছে। নির্বাচনে তার প্রতিপক্ষ ছিল বন্ধু পান্তু। পান্তুর সাথে ভোটে হেরে গিয়ে পনিরের মন বড্ড খারাপ হয়েছে। তাই বলে তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব কমেনি। সবাই যখন পান্তুকে নিয়ে বিজয়োল্লাস করে পনির তখন একা হয়ে পড়ে। যদিও পান্তু পনিরের সাথে কথা বলেছে। তাতেও তার মন ভালো হয়নি।
এ কথা তিতুমামু জানতে পেরে পনিরকে সান্ত¡না দেয়। তাকে নানাভাবে বোঝাতে চায়। এ বয়সেই নির্বাচন করে জীবনের একটা বাস্তবতার মুখোমুখি হয়েছে বলে তাকে মামা আরো অভিনন্দন জানায়। তাতেও যখন পনিরের মন ভালো হয় না তখন তাকে নিয়ে পান্তুদের বাড়িতে রওনা হয় তিতুমামু।
আমাদের স্কুলজীবনে এমন অভিজ্ঞতা হলে আমরাও বুঝতে পারব, শিখতে পারব অনেক কিছু।
‘কাবুতা’ একটি রোমাঞ্চকর গল্প। বন-জঙ্গল পশুপাখি আর সেই আদিম যুগের গল্প যাদের খুব পছন্দ তাদের এ গল্পটি পড়ে ভালো লাগবে। আট-দশ বছরের একটি বালক কাবুতা। বনের মধ্যেই তার বাস। বনের ফলমূল আর পশু শিকার করেই তাদের জীবন ধারণ করতে হয়।
খাদ্যের সন্ধানে বনে বের হয়ে পথ হারিয়ে ফেলে কাবুতা। এরপর নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে ফিরে আসে পরিবারের কাছে। ছোট ছোট বাক্য আর ছবির ব্যবহারে বইটি এতটাই মনোমুগ্ধকর যে, বইটি হাতছাড়া করতে ইচ্ছে করবে না।