“যুদ্ধ” বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ
‘যুদ্ধ’ ১৯৭১ সালে সংঘটিত আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিতে রচিত উপন্যাস। লেখক এ উপন্যাসে যুদ্ধের বিভিন্ন মাত্রা অনুসন্ধানে তীক্ষ পর্যবেক্ষণ, মনন এবং কল্পনাশক্তির ব্যবহার করছেন। তিনি যুদ্ধের প্রেক্ষাপট নির্মাণ করেছেন ব্যক্তির বেঁচে থাকার সঙ্কট, মূল্যবােধের রূপান্তর, ধর্মীয় বিশ্বাসের অনুষঙ্গে আঘাত, মৃত্যু, স্বজন হারানাের বেদনার ভেতর দিয়ে। পৃথিবীর যে-কোনাে দেশের যে-কোনাে কালের যুদ্ধের উদ্ভূত পরিস্থিতির এ এক মৌল সত্য। যে সত্য পৃথিবীর সব মানুষের অভিন্ন অনুভব। যিনি যুদ্ধের দেশীয় প্রেক্ষাপট নির্মাণ করেছেন একটি সেক্টরের সরাসরি যুদ্ধকে চিত্রিত করে এবং অগণিত মানুষের যুদ্ধে অংশগ্রহণ ও যুদ্ধ সম্পর্কিত দেশজ-ঐতিহ্য সংলগ্ন ভাবনার ভেতর দিয়ে।
এ উপন্যাসে একটি চরিত্র আছে। যার কোনাে নাম নেই। ‘লােকটি’ অভিধায় যে দেশের সর্বত্র ঘুরে বেড়ায়। অস্ত্রচালনার ট্রেনিং নেয়- যুদ্ধক্ষেত্রে যােদ্ধাদের পাশে পাশে থাকে। গ্রামে, গঞ্জে, শহরে, মানুষের বাড়িতে বাড়িতে ঘুরে বেড়ায়। পুরাে উপন্যাস জুড়ে সে একটি প্রতীকী চরিত্র। যাকে বলা যেতে পারে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা-প্রেরণা-সাহস এবং স্বাধীনতার স্বপ্ন।
এই উপন্যাসে স্বাধীনতার স্বপ্ন, নারী ও পুরুষকে সমানভাবে আন্দোলিত করে। উপন্যাসের মাখন যুদ্ধে তার পা হারায়- আর উপন্যাসের বেণু শত্রু কর্তৃক ধর্ষিত হলে মনে করে তার জরায়ু যখম হয়েছে। যে অর্থে মাখন মুক্তিযােদ্ধা, সে অর্থে বেণুও মুক্তিযােদ্ধা। এটি যে-কোনাে যুদ্ধের সত্য। তাই এ দেশের নিরস্ত্র সাধারণ মানুষ এ উপন্যাসের হিরাে।