“বাই-বারাঙ্গনা গাথা” বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা:
ই-বারাঙ্গনাদের নৃত্যগীতে জমজমাট ছিল একসময় নবাব-রাজা-ধনীদের জলসাঘর। ১৮১৬-র আগস্ট মাসের ‘এশিয়াটিক জার্নাল’-এ কলকাতায় বাই নাচের প্রথম বিবরণ প্রকাশিত। সেকালের কলকাতায় ‘গলির কোনাে উপরতলার ঘর থেকে বাইজীর গলায় বেহাগ শােনা যেত প্রায়শই। এমনকী বাইজির গান শুনে মুগ্ধ হয়েছিলেন কখনও রবীন্দ্রনাথ, কখনও বিবেকানন্দ। নৃত্যগীতের উদ্দেশ্য মনােরঞ্জন হলেও এই মেয়েদের জীবনে গানই ছিল অস্তিত্বের বিশেষ আলাে। সেদিনের সেইসব গানে ধরা পড়ে আছে সামাজিক ইতিহাসের বিচিত্র এক অধ্যায়। প্রখ্যাত গবেষক দেবজিত বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পাদিত ‘বাই-বারাঙ্গনা গাথা’ সব অর্থেই দুর্লভ ও জরুরি সংকলন। বাই-বারাঙ্গনাদের ইতিহাসের নানা পর্যায়ের উল্লেখের পাশাপাশি এই গ্রন্থে আছে সংগৃহীত অজস্র গানের ভাণ্ডার। রেকর্ডে প্রকাশিত, নাটক ও চলচ্চিত্রে ব্যবহৃত বাইবারাঙ্গনা সংগীতও সংকলিত। কিছু সংগীতের স্বরলিপিও গ্রন্থের আকর্ষণ। বাই-বারাঙ্গনা গাথা শ্লীলতা-অশ্লীলতার ঊর্ধ্বে এক বাস্তব ইতিহাসের উদ্ধার, পণ্যাঙ্গনা নারীজীবনের অন্বেষণও বটে।