“বস্তুবাদী বাউল” বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা:
বাউল-ফকিরদের চর্যা, সংস্কৃতি এবং সাহিত্যে যে চিন্তাচেতনা প্রকাশিত হয়, তাকে কোনােমতেই রহস্যময় ভাববাদ বলা যায় না। বাস্তব জগৎ ও জীবনকে, দেহ এবং দেহাশ্রিত গভীর অনুভবগুলিকে, এরা কোনাে আনুমানিক যুক্তি বা কাল্পনিক ঈশ্বর দিয়ে ব্যাখ্যা করতে নারাজ। পরলােকের স্বর্ণ বাসনাকে নেই এদের আস্থা। জৈব রাসায়নিক ব্যাখ্যায় সাধকেরা, রজঃ বীজে জীবন ও জগতের উদ্ভব নির্ণয় করে, মান্য করে চার ভূতকে। মানুষে, আদিশক্তি প্রকৃতিতে নির্মাণ করে প্রাণ, প্রাণী। কল্পিত পরলােক, স্বর্গ, পুনর্জন্মদি প্রত্যক্ষ প্রমাণের অভাবে বাউল করে।অগ্রাহ্য। মানুষ ব্যতিরিক্ত স্রষ্টাতেও এদের অমনােযােগ। তবে আদি প্রকৃতি এবং শক্তির এক প্রবাহকে স্বীকার করা হয় এ মতাদর্শে। সৃষ্টির, দেহের নিয়মকে জেনে, যিনি সেগুলিকে পরিচালনা করতে শিখেছেন, তিনি নিয়ন্ত্রক জীব থেকে নিয়ন্ত্রক প্রভুতে রূপান্তরিত হয়েছেন তিনিই সাঁই। সুস্থ নীরােগ দীর্ঘ পরমায়ু, শান্ত সুখী জীবন এবং সুতীব্র আনন্দকে অনুভব-সক্ষম বাউল সাধনা এক আনন্দমার্গ।