“কায়রো ট্রিলজি (প্যালেস ওয়াক)” বইটির সম্পর্কে কিছু কথা:
আমরা দেখতে পাই যে সময় ও দেশের রাজনীতির সাথে একটি পরিবারের জীবন কীভাবে অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িয়ে যায় এবং পরিস্থিতির সাথে বিভিন্ন সময়ে কীভাবে সামঞ্জস্য বিধান করতে হয়। কাহিনীর বিভিন্ন পর্যায় পাঠকের মনােযােগ এড়ানাের মতাে নয়। কামাল যখন আয়িদার প্রেমে পড়ে, তখন আয়িদার সামাজিক শ্রেণি তার কাছে মুখ্য ছিল না, বরং তার সংস্কৃতি, ইউরােপীয় বােধ ও ধর্মনিরপেক্ষ চেতনাই প্রধান আকর্ষণ ছিল। প্রচলিত ঐতিহ্যের বাইরে থেকে আয়িদা নিজের ভবিষ্যৎ স্থির করার ব্যাপারে ছিল সম্পূর্ণ স্বাধীন, আর কামালের মধ্যে ছিল মিশরের সার্বিক বিকাশের স্বপ্ন। মিশর নিয়ে কথা বললেই তার চোখের সামনে এসে উপস্থিত হয় আয়িদা। কিন্তু কামালের সাথে আয়িদার প্রেম ব্যর্থ হয়, যাকে এক ধরনের বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে দেখা যেতে পারে। এসময়ের রাজনৈতিক পরিস্থিতির খুঁটিনাটি উঠে এসেছে উপন্যাসে। কায়রাে ট্রিলজি’র সুদূরপ্রসারী রূপকল্প ও ভবিষ্যতের জন্য সততা ছিল। উপন্যাসটির প্রতিটি খণ্ডের সমাপ্তি ঘটেছে একটি মৃত্যু ও একটি জন্ম দিয়ে এবং শেষ খণ্ড ‘সুগার স্ট্রিট’ মৃত্যু ও জন্ম ছিল ভবিষ্যদ্বাণীর মতাে। উপন্যাসের পরিসমাপ্তি ঘটেছে আমিনার মৃত্যু এবং তার দুই নাতি আহমদ ও আবদ আল-মুনিমের গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে। একজন কমিউনিস্ট, অপরজন মুসলিম বাদার। সুগার স্ট্রিটের একই বাড়ি থেকে দুই বিপরীতমুখী ও প্রতিদ্বন্দ্বী আদর্শের ধারকের উদ্ভব এবং শেষ পর্যন্ত তারা উভয়ে কারাগারে একই প্রকোষ্ঠে বন্দি। কিন্তু ট্রিলজির শেষ খণ্ডে জন্ম বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ নবজাত একজন ইসলামপন্থীর পুত্র, যা আরব জগতের বর্তমান বাস্তবতার সাথে এখনও সামঞ্জস্যপূর্ণ।