প্রাচীন ভারত এক বিরাট মহাদেশ। সেই ভূখণ্ডের উদার সংস্কৃতি ও সাহিত্যে যৌনতা কোনো দিন অচ্ছ্যুত ছিল না। তবে ‘স্বাভাবিক’ যৌনতার পাশাপাশি ‘অস্বাভাবিক’ যৌনতাও বিরল ছিল না। বিভিন্ন সময়ে তা সমাজে নন্দিত ও নিন্দিত ছিল। স্বৈরাচার, বহুগামিতা, নানা কিসিমের যৌন মিলন, ইতরকাম, শবকাম- কী ছিল না মহাকাব্যে! মহাভারতের মতো এপিকে অজাচার, গণিকাবৃত্তি, ধর্ষণ ও সমকামের উদাহারণ ভুরি ভুরি।
তবে মহাভারত যেহেতু চার পুরুষার্থের (ধর্ম, অর্থ, কাম ও মোক্ষ) মধ্যে ধর্ম ও মোক্ষকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে, তাই সেখানে সংকীর্ণ কামকে উচ্চস্তরে বসানো হয়নি। বৃহত্তর অর্থে কাম হলো বাসনা। সেই বাসনাকে ধর্ম বা নৈতিকতা দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করতে হয়, তবেই মুক্তির পথে অগ্রসর হওয়া যায়। যৌনতা ও কাম এক কথা নয়। আবার ‘বিকৃত’ কামের চর্চাও নির্বাণের পথ নয়। মহাভারত এক আশ্চর্য সন্দর্ভ। এই মহাকাব্যের যৌনতা অন্য এক দার্শনিক পথের সন্ধান দিতে সক্ষম।