বইটি সম্পর্কে কিছু কথা:
তুমি যদি দিনের প্রতিটি সেকেন্ডকে তােমার জীবনের সবচেয়ে বড় লক্ষ্যটি পূরণের কাজে লাগাতে পারে, তবেই দেখবে, ছােটো ছােটো সাময়িক ব্যর্থতা আর তােমাকে দুর্বল করতে পারছ না। পৃথিবীর অল্প কিছু মানুষ অন্যদের চেয়ে অনেক বেশি সাফল্য পায়। পৃথিবীতে লক্ষ লক্ষ ব্যবসায়ী আছ, কিন্তু সবাই জেফ বেজোস, জ্যাক মা, ইলন মাস্ক বা ওয়ারেন বাফেট হতে পারে না। লক্ষ লক্ষ শিল্পী আছ, কিন্তু সবাই লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির মতাে জিনিয়াস হতে পারে না। পৃথিবীতে এত রাজনীতিবিদ আছ, কিন্তু সবাই নেলসন। ম্যান্ডেলা, বারাক ওবামা বা ভাদিমির পুতিন হতে পারে না। এর কারণ, সবাই আসলে তেমনটা হতে চায় না। মুখে হয়তাে বলে বড় কিছু করতে চায়, কিন্তু তাদের লক্ষ্য থাকে ছােটো, এবং স্বল্প মেয়াদী। যারা ইতিহাস গড়েন, তাদের লক্ষ্যই থাকে নিজের ক্ষেত্রে ইতিহাস গড়ার। তারা পাচ-দশ বছরের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে না। তারা এমন ভাবে কাজ কর, যেন শত শত বছর ধরে তাদের নাম মানুষের মনে থাকে। ব্যক্তিগত ও আর্থিক লক্ষ্য পূরণ, এবং মানসিক সুখ অর্জনে সেলফ ডিসিপ্লিন: দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য যে কোনাে ধরনের হতে পারে। সেটা হতে পারে ব্যক্তিগত অর্জন, বা আর্থিক সম্পদ অর্জন করা। কোটিপতি হওয়া, অথবা বড় কর্মকর্তা, রাজনীতিবিদ, বিজ্ঞানী বা শিল্পী হওয়া—এসবই দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য হতে পারে। লক্ষ্য যেটাই হােক না কেন-তুমি যদি লক্ষ্যে অটল থেকে, দিনের প্রতিটি মুহুর্ত সে লক্ষ্য পূরণের কাজে লাগাতে পারে-তবে সে লক্ষ্য পূরণ হবেই। তুমি যখন অন্য সব অপ্রয়ােজনীয় কাজ ও চিন্তা বাদ দিয়ে সাফল্যের বিষয়ের পেছনে সময় দেবে, তখন যে কোনাে সমস্যার সমাধান তােমার চোখে সহজেই ধরা দেবে। সফল হওয়ার পথ তুমি নিজেই খুঁজে বের করতে পারবে। লেখক বইয়ের শুরুতেই একটি কথা বলেন, সফল হওয়ার জন্য তােমার বড় ঘরে জন্মানাের দরকার নেই, বিরাট প্রতিভা নিয়ে জন্মানােরও দরকার নেই, শুধু লক্ষ্যের প্রতি অটল থেকে, অন্য সবকিছু বাদ দিয়ে কাজ করলে তুমি সফল হবে। মাইকেল জর্ডানকে সর্বকালের সেরা বাস্কেটবল খেলােয়াড় বলা হয়। তুমি কি জানাে, সে স্কুল টিমে ঢুকতেই পারেনি! স্কুল টিমে ঢুকতে না পেরেই সে জেদের বশে দিন রাত বাস্কেটবল চর্চা শুরু করে, এরপর ধীরে ধীরে সে দক্ষ হয়ে ওঠো। তারচেয়ে অনেক বেশি প্রতিভা বা সুযােগ নিয়ে জন্মেও হয়তাে অনেক খেলােয়াড় বিখ্যাত হতে পারেনি। কারণ, তারা জর্ডানের মতাে অন্য সবকিছু বাদ দিয়ে দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য নিয়ে প্রাকটিস করনি। তুমি আর্থিক সাফল্য চাও, অথবা অন্য কোনাে দিক দিয়ে সফল হতে চাও, তােমাকে দীর্ঘমেয়াদী একটি লক্ষ্য ঠিক করে কাজ করতে হবে। এখানে কোনাে অজুহাতের জায়গা নেই। ভালাে লাগছে না, এখন মুড নেই, এই হয়েছে, সে হয়েছে’—এসব অজুহাত এক্ষেত্রে নিষিদ্ধ। কাজের সময়ে যতই ফোন আসুক, টিভি সিরিজ লুক, বন্ধুরা আড্ডা দিক-তােমাকে তােমার কাজ করে যেতে হবে। নিজেকে কঠোর শাসনে রাখতে হবে। লক্ষ্য পূরণের আগে যদি কষ্ট করতে পার, তবে লক্ষ্য পূরণের পর তুমিই হবে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখি মানুষ। কাজ নষ্ট করে সাময়িক সুখকে প্রাধান্য দেওয়ার বদলে, সাময়িক সুখ নষ্ট করে যদি কাজকে প্রাধান্য দাও-তবেই সত্যিকার মানসিক সুখ ও প্রশান্তি পাবে। শেষ কথা: পাঠকদেরকে লেখক খুব গভীর ভাবে ভাবতে বলেন, কোন লক্ষ্যটি পূরণ হলে সে সবচেয়ে বেশি সুখি হবে? লক্ষ্যটি যা-ই হােক কেন-বাকি সবকিছু ভুলে সে লক্ষ্যের পেছনে ছুটতে হবে। দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় সে লক্ষ্য পূরণে কাজ করতে হবে। যদি খুব গুরুত্বপূর্ণ কিছু না হয়, মানে, যদি কেউ মারা না যায়, অথবা কোনাে বিপদগ্রস্থকে সাহায্য করার বিষয় না থাকে তবে সে নির্দিষ্ট সময়ে অন্য । কিছুই করা যাবে না। কোনাে অজুহাতই সে ক্ষেত্রে খাটবে না। তুমি যদি আসলেই সফল ও সুখি হতে চাও, তবে সবার আগে নিজের ইচ্ছা আর অনুভূতিকে নিয়ন্ত্রণ করা শিখাে । আর সে ক্ষেত্রে যদি আমাদের এই প্রচেষ্টা তােমাকে সামান্য একটু সাহায্যও করে থাকে-তবেই আমাদের প্রচেষ্টা সফল ধরে নেব। সাফল্যের পথে তােমার জন্য নেতিবাচক আবেগ নিয়ন্ত্রণ করার উপায়: আবেগীয় বুদ্ধিমত্তা সময়ের কাজ সময়ে করে কারা?-সময়ের কাজ সময়ে করার উপায় অসাধারন সাফল্যের গােপন সূত্র: অনিচ্ছায় কাজ করা!!’