“স্তালিনের বাস্তুভিটায়” বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ
জোসেফ স্তালিন—এককালে যিনি ছিলেন প্রতাপশালী রাষ্ট্রনায়ক। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে তিনিই সােভিয়েত ইউনিয়নকে নিয়ে আসেন জয়ের দ্বারপ্রান্তে। আবার তারই ভ্রান্তনীতি কিংবা বলা চলে নির্দেশে প্রাণ হারায় লক্ষ লক্ষ নিরাপরাধ মানুষ । নিজের সকল রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীকে তিনি নিকেশ করে দেন। সময়ের পরিক্রমায় সেই সত্য ক্রমেই উদ্ভাসিত হওয়ায় স্তালিনের বিতর্কিত চরিত্রটিই আজকাল মুল্যায়িত হয় বেশি। কিন্তু তার জন্মভূমি জর্জিয়ায় গরি শহরে গিয়ে লেখক দেখলেন ভিন্ন এক চিত্র। সেখানে আজও লােকে কুঁদ হয়ে আছে স্তালিন-মহিমায়। সেই বিস্ময়টুকু সাথে করে লেখক আমাদের নিয়ে ঘুরলেন পুরাে ককেশাস অঞ্চলে। সেই যাত্রার সঙ্গী হয়ে আর্মেনিয়ায় গিয়ে এপ্রিকট কাঠনির্মিত বাঁশি বাজাবার পর বাকু শহরের অগ্নি মন্দিরে গিয়ে আমরা সন্ধান পাই এক অনির্বাণ শিখার। তারপর উত্তর আজারবাইজানের প্রত্যন্ত খেলুগ গ্রামে গেলে স্থানীয় মােড়লের মেহমানপনা আমাদেরকে আপ্লুত করে ছাড়ে। আমরা তারপর হয়ত চলে যাই আরও উত্তরে। পৃথিবীর রুটির ঝুড়ি নামে খ্যাত দেশ ইউক্রেনে। সেখানে কিয়েভ শহরে মিহি ছানার কেক কিয়েভ কেক খাবার পর লেখকের দৃষ্টি ধার করে জানতে পারি বহুকাল আগে এ শহরের বেশ কিছু নামি চিত্রশিল্পী শুধুমাত্র কিছু বিশেষ ছবি আঁকার অপরাধে স্তালিনের জল্লাদ বাহিনীর কাছে প্রাণ খুইয়েছিলেন। ইউক্রেনিয় চিত্রশিল্পের গল্প ফুরােতে না ফুরােতেই আমরা ভেসে আসি চিত্রশিল্পের আরেক স্বৰ্গনগরী ফ্লোরেন্সে। সেখানে পরিচিত হই মাইকেল এঞ্জেলো কিংবা ভিঞ্চির কিছু অমূল্য কর্মের সাথে। পুরােটা পথ পরিভ্রমণের নানা পর্যায়ে বিস্মিত হই-আমরা আসলে কোথায়? ভ্যাটিকান সিটির মর্মর ভাস্কর্য পিয়েতার সম্মুখে? নাকি কোনাে এক সন্ধ্যেমুখর লগ্নে নেপালের পােখারা শহরের লেকসাইড রােডের উপান্তে? আমাদের ঘাের খুব সহজে কাটে না।