“আধিয়ার” বইয়ের প্রথম ফ্ল্যাপ এর লেখা:
তেভাগা আন্দোলনের সময় বুড়িমা ছিলেন কিশােরী বউ। ধান কেটে আধিয়াররা নিজ খােলানে তুলতে লাগল। জমিদারের পুঞ্জ ভেঙে তারা নিজ ধান নিয়ে আসছে দশের খােলানে। বুড়িমার আধিয়ার স্বামীকে ধরে নিয়ে গেছে পুলিশ। বুড়িমাকে খুঁজছে। তিনি গা ঢাকা দিয়েছেন। সেসময় দেশ ভাগ হয়ে গেল। বুড়িমার বাবারবাড়ি, শ্বশুরবাড়ি পড়ল পশ্চিমবঙ্গে । বুড়িমা আত্মগােপন করে আছেন পূর্ববাংলায়। অভিমান কিংবা কষ্টে তিনি ফিরে গেলেন না। কৃষক বহর আলি ধান নিয়ে বাজারে গেল। মেয়ে বলল, কতদিন মাংস খাইনি!’ বহর আলি ধান বেচে মাংস কিনতে পারল না। কৃষক বহর আলি বর্গাচাষি থেকে হয়ে গেছে দিনমজুর। বাংলাদেশের কৃষক আর খেতমজুর অধিকার আদায়ে একজোট হয়েছে। দাবি তুলেছে তেভাগার। যাদের জমি তারা চায় না কৃষক মর্যাদা আর সম্মান নিয়ে বাঁচুক। অগ্রহায়ণের কুয়াশা মােড়ানাে ভােরে সুন্দরদিঘি গ্রামে পুলিশ এলাে বুড়িমাকে গ্রেফতার করতে। দলেদলে কৃষক আর খেতমজুররা এগিয়ে আসছে। পুব আকাশে আলাে ছড়িয়ে সূর্য উঠছে। সূর্যের আলাে এসে পড়েছে বুড়িমার লালচাদরে। বুড়িমা তখন অবিচল সাহস হয়ে গেছেন। লড়াই-সংগ্রাম আর আমাদের ঋজু ইতিহাসের কাহিনি আধিয়ার।