১৯৭১ : অসহযোগ আন্দোলন ও প্রতিরোধ গ্রন্থটি বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম প্রক্রিয়ার প্রথম প্রহরের ওপরে নির্মিত। বহুকাল আগে ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রগঠনের যে যাত্রা শুরু হয়েছিল তার চরমপর্বের ঘটনাবলি বিন্যস্ত করে এই গ্রন্থটি তৈরি করা হয়েছে।
বাংলাদেশ রাষ্ট্র জন্মের একাধিক পর্ব রয়েছে। যার মধ্যে চরমপর্ব হলো ১৯৭০ সালের নির্বাচন। এই নির্বাচনের ফলে সামরিক শক্তি দিয়ে নির্মিত পাকিস্তান রাষ্ট্রের কেন্দ্রভিত্তিক শাসন ব্যবস্থার মৌলিক দুর্বলতা উন্মোচিত হয়। এ প্রকারের রাষ্ট্র যে আর টিকতে পারবে না সেটাও পরিষ্কার হয়ে যায়। পাক আর্মির অস্তিত্বের জন্য নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয় এমন একটি সংকট তৈরি করে, যা সমাধানযোগ্য ছিল না। এটাকে সামলাতে গিয়ে পাকিস্তান আর্মি সংসদ মুলতবি ঘোষণা করে। এর প্রতিবাদে বাংলাদেশের জনগোষ্ঠী রুখে দাঁড়ায় অর্থাৎ এ পর্যায় থেকেই স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার চরমপর্ব শুরু হয়। পরবর্তীতে পাকিস্তান আর্মি আক্রমণ করলে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে ওঠে। প্রতিরোধের প্রথম পর্যায় শেষ হয় এপ্রিল মাসের শেষের দিকে। পরবর্তীতে ভারত থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধারা ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে জাতীয় যুদ্ধে লিপ্ত হন। যার উদ্দেশ্য ছিল দেশকে শত্রুমুক্ত করা।
এই গ্রন্থে পহেলা মার্চ থেকে এপ্রিলের শেষ পর্যন্ত যে অসহযোগ ও প্রতিরোধ গড়ে ওঠে, সেটাকে তথ্য ও দলিলের মাধ্যমে নির্মাণ করা হয়েছে। গ্রন্থটি দুটি অংশে ভাগ করা হয়েছে। নিরস্ত্র পর্ব অর্থাৎ পহেলা মার্চ থেকে ২৫ মার্চ রাত পর্যন্ত এবং সশস্ত্র পর্বটি ২৫ মার্চ রাতের পর থেকে এপ্রিল মাসের শেষ পর্যন্ত। এরমধ্যে ১০ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠিত হয়। তারপর পাকিস্তানিদের হাত থেকে বাংলাদেশ মুক্ত করার জাতীয় যুদ্ধ শুরু হয়।