আধিপত্য কী? ক্ষমতার প্রকাশরূপ কেমন? কোথায়, কীভাবে তা কাজ করে? কোন কৌশলে সূচিত হয় নয়া-উপনিবেশ আর ডালপালা মেলে টিকে থাকে যুগ যুগ ধরে? এর বিরুদ্ধে আমরা লড়ব কী উপায়ে। বিশ্বায়নের নামে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র আর তার ইউরোপীয় দোসরদের পৃথিবীব্যাপী আগ্রাসনের মুখে এ প্রশ্নগুলো নিয়ে চিন্তাভাবনা খুব জরুরি। এশিয়া-আফ্রিকার প্রাক্তন উপনিবেশগুলোর বহু ভাবুক-বুদ্ধিজীবী এইসব বিষয় নিয়ে কথা বলছেন, মানুষের চৈতন্যে প্রতিরোধের ভিত তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছেন। আমাদের এখানে ক্ষমতা, আধিপত্য, উপনিবেশী ও নয়া-উপনিবেশী আগ্রাসন নিয়ে ফয়েজ আলম অনেকদিন থেকে লেখালেখি করছেন। এ-বইয়ের বিভিন্ন প্রবন্ধে তিনি বোঝাতে চেষ্টা করেছেন কী করে সাংস্কৃতিক ও জ্ঞানতাত্ত্বিক দিক দিয়ে নয়া-উপনিবেশী আধিপত্য আমাদের ঘাড়ে চেপে বসছে, কেনই-বা এর বিরুদ্ধে কার্যকর প্রতিরোধ গড়ে তোলা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি বলতে চান আমাদের ইতিহাসবোধ, রাজনীতি, সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থা, শিল্পসাহিত্য সব ক্ষেত্রেই উপনিবেশের দাগ ধরে আগাচ্ছে নয়া-উপনিবেশী আগ্রাসন, বিশ্বায়ন, বাজার অর্থনীতি। আগ্রাসনের প্রথম পা রাখার জায়গাটা হল উপনিবেশী চিন্তাধারায় বিকশিত স্থানীয় একদল সুবিধাভোগী মানুষ, ফয়েজ আলম যাদেরকে বলেছেন, ‘নয়া-উপনিবেশের কড়িবর্গা’। এ কড়িবর্গারাই যুগ যুগ ধরে ঠেকিয়ে রাখছে বিক্ষুব্ধ জনগোষ্ঠীর প্রতিরোধ প্রচেষ্টাকেও। ফয়েজ আলমের আর সব কাজের মতো এ-বইও অনুসন্ধিৎসু পাঠকের চৈতন্যে নয়া দিগন্তের ইশারা জাগাবে আশা করি।