পৃথিবীর চার ভাগের তিন ভাগ হচ্ছে জল। এতো জল কেন? এতো জল এজন্য যে, এর চেয়ে কম জল হলে পৃথিবীপৃষ্ঠ খুব তপ্ত থাকতো। সেখানে প্রাণের উদ্ভবই হতো না। আপাতত জরিপকৃত অন্য কোনো গ্রহে যেমন প্রাণের অস্তিত্বের সন্ধান পাননি মহাকাশ বিজ্ঞানীরা। এই পৃথিবীতে বসবাসকারী মানব সমাজের সঙ্গে কবিদের সম্পর্কটা হচ্ছে, আমার বিবেচনায় জলের মতো। জল ছাড়া পৃথিবী যেমন, তেমনি কবি ছাড়া মানবসমাজও অকল্পনীয়। তাই মানব সমাজের বিকাশের ধারাবাহিকতায়, ইতিহাসে কবিদের একটা বিরাট-নিয়ামক ভূমিকা রয়েছে। আমি সংখ্যাগণনার অতীত প্রত্যুযু থেকে শুরু করে হালসময় অবধি কবিদের সেই ভূমিকাকে অতীব গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করি। আমার প্রতিষ্ঠিত কবিতাকুঞ্জের দেয়ালে প্লেটোর একটি বাণী উৎকীর্ণ রয়েছে– তিনি বলেছেন–“Poetry is nearer to vital truths than History.” ঐরূপ বিবেচনা থেকেই নতুন কবিদের স্বাগত জানাতে আমি আমার অন্তরে কার্পণ্য রাখি না। একথা আজ বিশ্বস্বীকৃত যে, বাংলাদেশ হচ্ছে কবি ও কবিতার দেশ। বিশেষ করে গত পঞ্চাশ বছর ধরে আমরা একটা নতুন প্রবণতা লক্ষ্য করছি– একুশের বই মেলাকে সামনে রেখে মূখ্যত বাংলা ভাষাভাষী মানুষের এই ভূূখন্ডে বহু নতুন কবির জন্ম হচ্ছে। বই মেলায় সবচেয়ে বেশি প্রকাশিত হচ্ছে কবিতার বই। এতো বেশি কবিতার বই পৃথিবীর অন্য কোনো দেশেই দেখা যায় না। বাংলাদেশের বই মেলায় দেশের নবীন, মধ্যবয়সী এবং প্রবীণ — সকল কবিরই নতুন কাব্যগ্রন্থ প্রকাশ হতে দেখা যায়।