‘সন্দেহ হবে না কেন’ ৩৩ টি কবিতার একটি সন্দেহসমগ্র, যেখানে একটিমাত্র উদগ্র ধনুক থেকে বেরিয়ে আসছে অসংখ্য সন্দেহের তীর। এই সন্দেহ মানুষের প্রতি; মানুষের আচরণ, মনস্তত্ত্ব, সংকট, আক্রমণ, তার দৈনন্দিন চলাফেরা এবং সামগ্রিকভাবে পাঠকের নিজের প্রতি। সংকট সৃষ্টি ছাড়া বৃহদার্থে এখানে কোনো সমাধান নেই। কিন্তু মনোযোগী পাঠক মাত্রই খুঁজে নিতে পারবেন নিজের স্বরূপ, সুতরাং ত্রুটি-বিচ্যুতি। সময়ের সাথে সাথে অবচেতনেই তাই হয়তো বেরিয়ে আসবে সুপথ। উচ্চস্বরের কোনো কবিতা এখানে না থাকলেও অনুচ্চারেই ঘুরে ফিরে এসেছে দ্রোহ, কখনো কখনো উঁকি দিয়ে গেছে বিরহও। প্রেমের ভূমিকা তাই এখানে অনেকটা ধমনীর মতোই, চামড়ার অন্তরালে বয়ে গেছে অলক্ষ্যেই। নানাবিধ না থাকা সত্ত্বেও বিষয়বস্তুর নিরিখে ‘সন্দেহ হবে না কেন’ কাব্যে যে বিষয়টি তুমুলভাবে আছে তা হলো আন্তর্জাতিকতা। পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তের যেকোনো পাঠকই খুঁজে নিতে পারবেন নিজেকে, সংযোগ করতে পারবেন তাঁর পারিপার্শ্বিকতাকে। সুতরাং মানুষ পাঠের প্রকৌশলে কবির কল্লোল মূলত আপনাকে দিয়ে পড়িয়ে নেবেন আপনাকেই।