শিক্ষকতা পেশা হলেও চাকুরি নয়। চাকুরিতে শ্রম থাকলেও বিশ্রাম আছে। শিক্ষকদের বিশ্রাম নেই। শিক্ষকতা একটি নেশা। এ নেশা জ্ঞান অর্জন, সৃষ্টি ও বিতরণের। এ নেশা স্বপ্ন দর্শন ও প্রদর্শনের। সে সঙ্গে মানুষ গড়ার মধ্য দিয়ে ওই স্বপ্ন বাস্তবায়নের। এ নেশা শিক্ষার্থীদের ভালোবাসা ও কল্যাণ কামনার। কৃষক আর শ্রমিকের মতো শিক্ষকও যুগপৎ চাষী ও শ্রমিক। তার মাঠ আর ফ্যাক্টরি হলো শ্রেণিকক্ষ। তিনি জ্ঞানের লাঙ্গল চষেন। স্বপ্নের বীজ বোনেন। উৎপাদন করেন স্বপ্নবাজ আলোকিত মানুষ। এরা দেশকে এগিয়ে নেন। বিশ্বের বুকে দাঁড়ান মাথা উঁচু করে। তবে সম্প্রতি বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার ওপর দলীয় রাজনীতি আর বণিকবৃত্তির প্রভাব পড়েছে। বেড়েছে রাজনীতির তীব্রতা। শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদেরকে অনুকরণীয় আইকন, দার্শনিক ও একাডেমিক পিতার আসনে বসাতে পারছেন না। উন্নত দেশগুলোর শিক্ষাঙ্গনের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে সুশাসন ও পেশাদারিত্ব নেই আইন থাকলেও তা মানা হয় না। ছড়িয়ে পড়েছে অন্যায় আর দুর্নীতি। ক্যাম্পাসের দখলদারিত্ব সংস্কৃতি আর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অন্দরমহলের স্বরূপ ও ভাবধারা সম্পর্কে সবাই অবগত নন। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্ণপরিচয়হীন শিক্ষক হিসেবে লেখক তার একাডেমিক জীবন ও কাজকর্মের মধ্য দিয়ে এ গ্রন্থে শিক্ষাঙ্গনের অভ্যন্তরীণ বাস্তবতা তুলে ধরেছেন। যাঁরা শিক্ষক বা শিক্ষক হতে চান, তাঁদের পড়ার টেবিলে বইটি স্থান পাবে। সাধারণ পাঠকগণও গ্রন্থটি পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ব্যবস্থাপনা, পেশাদারিত্ব ও সুশাসনের স্বরূপ সম্পর্কে জানতে, বুঝতে ও ভাবতে পারবেন।