প্রতিটি মানুষের জীবন একটি বই। বিস্মৃতির দহন মানুষের মনের বিভিন্ন অবস্থা ও জীবনের নানারকম অধ্যায়ের উপন্যাস। যেখানে মানুষের মনের ভেতরে বাস করা এক ধরণের পোকার আনাগোনা দেখা যায় যা তাকে নিঃসঙ্গ করে ফেলে। বিষণ্নতা, হতাশা, হিংসা, বন্ধুত্বহীনতা কুরে খায় নিঃসঙ্গ পোকার মত বইকে। হারিয়ে যাওয়া স্মৃতির অংশের দহন আমাদের মাঝে অবচেতনভাবে ভর করে আর আমরা হয়ে যাই নিজেদের মাঝে নিজেরাই একা। একাকী জীবনে মনের ভিতরে অনেক অনেক ছেঁড়া দৃশ্য ঘুরতে থাকে বায়োস্কোপের মতো, যা চিন্তাভাবনার সাথে মিলিয়ে পাওয়া না পাওয়ার যন্ত্রনায় টিকে থাকতে নিজেরাই তৃপ্তিদায়ক সিনেমা বানাই। জীবনের অন্তর্মুখী ও বহির্মুখী সংবিধান কখনো মেলে কখনো মেলে না। তাই আমরা সব সমস্যাও বুঝি না, সমাধান খুঁজি না, এই থেকে আমরা হয়ে যাই নিজের অজান্তে একা। সেই একা জীবনে যদি কেউ বন্ধু হয়েও আসে সেও চলে যায় হারিয়ে নিজের মনের পৃথিবীতে। সেই নিঃসঙ্গ পোকার কেউ কখনো স্থির মানুষের মতো ভাবতে পারে না। ভাবতে গেলেই আনন্দ-বিধুর টুকরোগুলো মেলাতে পাগলপ্রায় হয়ে যায়, যখনই স্মৃতিচারণ করতে চায় অতীতের, তখন সেই ছিঁড়ে যাওয়া স্মৃতি অসহায়ভাবে আঁকড়ে ধরে নিঃসঙ্গতাকে। তখন রয়ে যাওয়া নিজের নিঃসঙ্গ জীবনের সাথে বইতে হয় আরও অনেককে না পাওয়ার ভীষণ ভারী এক বোবাকান্না । এই পৃথিবীতে আমরা অনুভব করতে বাধ্য হই দিনশেষে সবাই একা ।