জলদাসীর গল্প

৳ 250.00

লেখক হরিশংকর জলদাস
প্রকাশক মাওলা ব্রাদার্স
আইএসবিএন
(ISBN)
9847015601997
ভাষা বাংলা
পৃষ্ঠার সংখ্যা ১১১
সংস্কার ৬ষ্ঠ প্রকাশ, ২০২২
দেশ বাংলাদেশ

“জলদাসীর গল্প” বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ
হরিশংকর জলদাস সমুদ্রপাড়ের জেলেদের নিয়ে। লিখেছেন ‘জলপুত্র’ ও ‘দহনকাল’ নামের উপন্যাস। এবার লিখলেন ‘জলদাসীর গল্প’, জেলেনারীদের নিয়ে লেখা হরিশংকরের প্রথম গল্পগ্রন্থ এটি। জেলে দাম্পত্যজীবন সমবায়ী এ-জীবনে নারীপুরুষের সমান অবদান। কিন্তু অন্যান্য সমাজের মতাে জেলেনারীও বঞ্চিত-অবহেলিত। তাদের মর্মন্তুদ হাহাকার, বিপর্যয়-বিপন্নতার বেদনাজীর্ণ গৃহকোণে গুমরে মরে। হরিশংকর গ্রন্থস্থ দশটি গল্পে এই জেলেনিদের জীবনকথা শুনিয়েছেন। ‘মােহনা’ পাঠককে একাদশ শতাব্দীর কালিন্দীপাড়ের এক বেশ্যাপল্লীতে নিয়ে যাবে। ‘কোটনা’ ও ‘চরণদাসী’তে আছে জেলেনির বহুগামিতার কথা। ‘ঢেন্ডােরি’তে লেখক জেলে দাম্পত্যজীবনের আঁধার দিকটিকে তুলে ধরেছেন। ‘সুবিমলবাবু’ ও ‘দুখিনিতে অনন্তবালা ও মালতি নামের দুজন জেলেনারী স্বমহিমায় উজ্জ্বল। ‘প্রতিশােধ’, ‘একজন জলদাসীর গল্প’, ‘দইজ্যা বুইজ্যা’ প্রভৃতি গল্প পাঠককে নিরবচ্ছিন্ন এক আহাজারির সামনে দাঁড় করাবে। হরিশংকর জলদাস যে শুধু কাহিনী লেখেন না, সমাজকেও লেখেন-‘জলদাসীর গল্প’ তার যথার্থ প্রমাণ।

প্রখ্যাত ঔপন্যাসিক হরিশংকর জলদাস ১৯৫৫ সালের ১২ই অক্টোবর বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগের উত্তর পতেঙ্গা গ্রামের এক জেলে পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা যুধিষ্ঠির জলদাস পেশায় ছিলেন একজন জেলে। ফলে আর্থিক অভাব অনটন আর অর্থনৈতিক টানাপোড়েনই ছিল হরিশংকরের বেড়ে ওঠার সঙ্গী। হরিশংকর জলদাসের শৈশব-কৈশোর কাটে পতেঙ্গার কৈবর্তপাড়ায়। তার বাবার স্বপ্ন ছিল ছেলেকে জেলের জীবনযুদ্ধে না জড়িয়ে শিক্ষিত করবেন যেন ছেলে সম্মানের জীবনযাপন করতে পারে। হরিশংকরের প্রাথমিক শিক্ষাজীবন শুরু হয় দেবেন্দ্রলাল দে’র আদাবস্যার নামের এক পাঠশালায়। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নিতে তিনি ভর্তি হন পতেঙ্গা বোর্ড প্রাইমারি স্কুলে। ১৯৭১ সালে পতেঙ্গা হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক পাস করেন। চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতক সম্পন্ন করেন তিনি। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ পাস করে বাবার স্বপ্ন পূরণে আরো একধাপ এগিয়ে যান হরিশংকর। 'জাইল্যা' ঘরের সন্তান বলে তাকে বিভিন্ন সময়ে অপমানিত হতে হয়েছে, শুনতে হয়েছে ‘জাওলার ছাওয়াল’ কটুক্তি। সেই কথার উচিত জবাব দিতে তিনি ২০০৭ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে ‘নদীভিত্তিক বাংলা উপন্যাস ও কৈবর্ত জনজীবন’ বিষয়ে গবেষণা করে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। এখানে তিনি জেলেদের জীবনের সকল আনন্দ-বেদনা, উৎপত্তি-বিকাশ, তাদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক জীবন ইত্যাদি তুলে ধরেন। পেশাগত জীবনে হরিশংকর জলদাস চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান। কিন্তু কর্মজীবনের শুরুতে অভাবের দিনগুলোতে তিনি দিনে শিক্ষকতা এবং রাতে বাবার সাথে সমুদ্রে মাছ ধরতে যেতেন। ৪৭ বছর বয়সে তিনি তার প্রথম উপন্যাস ‘জলপুত্র’ লেখেন। এরপর, ক্রমাগত বাজারে আসতে থাকে হরিশংকর জলদাসের নতুন বই। হরিশংকর জলদাসের বইগুলোতে সবসময়ই উঠে এসেছে নিপীড়িত, প্রান্তিক এবং নিচুতলার মানুষের কথা। হরিশংকর জলদাসের উপন্যাসসমগ্র সমৃদ্ধ হয়েছে ‘আমি মৃণালিনী নই’, ‘হৃদয়নদী, ‘রামগোলাম’, ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’ ইত্যাদি চমৎকার উপন্যাসের মাধ্যমে। হরিশংকর জলদাসের ছোটগল্প ‘লুচ্চা’, ‘জলদাসীর গল্প’, ‘মাকাল লতা’ প্রভৃতিও পাঠকপ্রিয়। এছাড়া দুটি আত্মজীবনী রচনা করেছেন তিনি। ‘কসবি’, ‘দহনকাল’, ‘জলপুত্র’ হরিশংকর জলদাস এর সেরা বই। মধ্যবয়সে লেখা শুরু করলেও সাহিত্যকর্মে নতুন মাত্রা যোগ করায় তিনি বহু পুরস্কার অর্জন করেছেন। ২০১১ সালে ‘প্রথম আলো বর্ষসেরা পুরস্কার’ (দহনকাল), ২০১৩ সালে ‘আলাওল সাহিত্য পুরস্কার’ (জলপুত্র), ‘ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কার’ (প্রতিদ্বন্দ্বী), ‘বাংলা অ্যাকাডেমি পুরষ্কার’, ‘সিটি আনন্দ আলো পুরস্কার’ সহ ভাষা ও সাহিত্যে অবদানের জন্য ২০১৯ সালে তিনি পেয়েছেন ‘একুশে পদক’।


লেখক সম্পর্কে বিস্তারিত পড়ুন →
বই সম্পর্কে কোন জিজ্ঞাসা বা মতামত থাকলে আমাদেরকে জানান
শেয়ার করুন

লেখকের অন্য বইসমূহ

প্রকাশকের অন্য বইসমূহ