ফ্ল্যাপে লিখা কথা
লতিফার জন্ম কাবুলে ১৯৮০-তে। মধ্যবিত্ত একটি পরিবারে। পরিবারটি একই সাথে উদার এবং ধর্মীয় মনোভাবাপন্ন। কিশোর বয়সেই তার আগ্রহ জন্মে ফ্যাশন , সিনেমা ও বন্ধুদের সাথে বাইরে ঘুরে বেড়ানোতে। তার স্বপ্ন ছিল সাংবাদিক হবে। ডাক্তার মা, ব্যবসায়ী বাবা তার স্বপ্নকে উৎসাহিত করতেন। এলো ,১৯৯৬ সন। তালেবানরা আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে নিল।আর সেই মুহূর্তে ষোড়শী লতিফা তার নিজের বাড়িতে অবরুদ্ধ হলো। তার স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেল। তার মা আর কাজে যেতে পারলেন না। খুব সাধারণ এবং একবারেই প্রাথমিক যে স্বাধীনতা ,রাস্তায় হাঁটা ,জানালা দিয়ে বাইরে দেখা সবই তার জন্যে নিষিদ্ধ হয়ে গেল।সে বাধ্য হল তার সমগ্র অবয়ব কালো বোরখা দিয়ে ঢাকতে।
বেদনায় ভরা সততার সাথে এবং স্পষ্ট ভাষায় লতিফা বলে গেছে কিভাবে একটি ধর্ম বিশ্বাসকে ঘিরে অন্ধ গোঁড়ামিভরা ভুল ব্যাখ্যা প্রদানের ফলে তার পৃথিবীটা একেবারে অন্যরকম হয়ে গেল। তার গল্প মানুষের হৃদয়কে প্রবলভাবে আলোড়িত করে। পশুশক্তিতে আক্রান্ত একটি দেশের ভয়ঙ্কর করুণ পরিনতির বিবরণ জানতে পেরে। । কিন্তু লতিফা সিদ্ধান্ত নেয় বেঁচে থাকার,মুক্ত এবং আশা ভরা জীবনযাপানের।
সে তার বইয়ের উৎসর্গপত্রে লিখেছে, ‘জীবন এক সময় শেষ হবেই/তাতে ভারাক্রান্ত হবার কোন কারণ নেই/বশ্যতা স্বীকার যদি আমার জীবনের শর্ত হয়/ সে দাসত্বের জীবন আমি চাই না/ দাসত্ব সোনার বর্ষণে বন্যা বইয়ে দিতে পারে/ কিন্তু আমি আকাশকে বলব/এই বর্ষায় আদৌ কোন প্রয়োজন নেই।
ভূমিকা
বৈদিক যুগে যেকোন রকম জ্ঞানার্জনের জন্যে গুরু গৃহে যেতে হত। গুরুদীক্ষা দিতেন , শিক্ষা দিতেন। সে রকম সুদূর ইংল্যাণ্ডে বসেও যিনি আমাকে বিভিন্ন পথে সর্বতোভাবে শিক্ষিত করে তুলবার নিরন্তর চেষ্টা করে চলেছেন,তিনি লেখক-সাংবাদিক শ্রদ্ধাভাজন আব্দুল মতিন। My forbidden Face বইটিও তিনি আমাকে পাঠিয়েছিলেন। বইটি আমাকে এতই অভিভূত করে যে এটা অনুবাদ করার কথা ভাবি একটা দায়িত্ব বোধ থেকে। আমার মনে হয়েছে বইটি একটি জীবন্ত দলিল।ধর্ম,সংস্কৃতি তাদের সাথে তালেবানদের সম্পর্ক ,তার স্বরূপ এবং তা থেকে ভয়ঙ্কর সঙ্কট , যা ধীরে ধীরে ধর্মের খোলসে থেকে বিস্তার করে চলেছে পৃথিবীময়, সেটা সবার জানা দরকার।সেটা জানিয়েছে লতিফা। আফগান তনয়া লতিফা। তার জীবন থেকে উৎসারিত এ সত্য কাহিনী।
লতিফার জন্ম কাবুলে ১৯৮০-তে। মধ্যবিত্ত একটি পরিবারে। পরিবারটি একই সাথে উদার এবং ধর্মীয় মনোভাবাপন্ন। কিশোর বয়সেই তার আগ্রহ জন্মে ফ্যাশন , সিনেমা ও বন্ধুদের সাথে বাইরে ঘুরে বেড়ানোতে। তার স্বপ্ন ছিল সাংবাদিক হবে। ডাক্তার মা, ব্যবসায়ী বাবা তার স্বপ্নকে উৎসাহিত করতেন। এলো ,১৯৯৬ সন। তালেবানরা আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে নিল।আর সেই মুহূর্তে ষোড়শী লতিফা তার নিজের বাড়িতে অবরুদ্ধ হলো। তার স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেল। তার মা আর কাজে যেতে পারলেন না। খুব সাধারণ এবং একবারেই প্রাথমিক যে স্বাধীনতা ,রাস্তায় হাঁটা ,জানালা দিয়ে বাইরে দেখা সবই তার জন্যে নিষিদ্ধ হয়ে গেল।সে বাধ্য হল তার সমগ্র অবয়ব কালো বোরখা দিয়ে ঢাকতে।
বেদনায় ভরা সততার সাথে এবং স্পষ্ট ভাষায় লতিফা বলে গেছে কিভাবে একটি ধর্ম বিশ্বাসকে ঘিরে অন্ধ গোঁড়ামিভরা ভুল ব্যাখ্যা প্রদানের ফলে তার পৃথিবীটা একেবারে অন্যরকম হয়ে গেল। তার গল্প মানুষের হৃদয়কে প্রবলভাবে আলোড়িত করে। পশুশক্তিতে আক্রান্ত একটি দেশের ভয়ঙ্কর করুণ পরিনতির বিবরণ জানতে পেরে। । কিন্তু লতিফা সিদ্ধান্ত নেয় বেঁচে থাকার,মুক্ত এবং আশা ভরা জীবনযাপানের।
সে তার বইয়ের উৎসর্গপত্রে লিখেছে, ‘জীবন এক সময় শেষ হবেই/তাতে ভারাক্রান্ত হবার কোন কারণ নেই/বশ্যতা স্বীকার যদি আমার জীবনের শর্ত হয়/ সে দাসত্বের জীবন আমি চাই না/ দাসত্ব সোনার বর্ষণে বন্যা বইয়ে দিতে পারে/ কিন্তু আমি আকাশকে বলব/এই বর্ষায় আদৌ কোন প্রয়োজন নেই।
বইটি প্রকাশের পেছনে অজস্র ঋণ একাধিক মানুষের কাছে । প্রথমত ফরাসি ভাষায় বইটি প্রকাশিত হবার সাথে সাথে তা বিপুর জনপ্রিয়তা লাভ করবার পর অবিলম্বে যারা বইটি ইংরেজীতে প্রকাশ করেন, সেই কর্নধারদের কাছে। দ্বিতীয়ত শ্রদ্ধেয় আবদুল মতিন-কে তিনি না পাঠলে তো বইটি অগোচরেই থেকে যেত। পরের ঋণ জমা রয়েছে ‘অনন্যা ‘ সম্পাদক তাসমিমা হোসেন, আমার কাছে যিনি এক অনন্য মানুষ, তার কাছে তিনি তার পত্রিকায় কবি বেলাল চৌধুরীর উৎসাহে লেখাটি ধারবাহিকভাবে পত্রস্থ করেছেন বলেই না মাহবুব ভাই-এর চোখে পড়ল। মাঝখানে সেতু হিসেবে কাজ করেছেন আলতাফ পারভেজ। নেপথ্য থেকে সহযোগিতা করেছেন মোস্তফা। এদের সবার কাছে ঋণী স্বীকার করছি।
সবশেষে মাহবুব ভাই(মাহবুব আলম) কে অশেষ কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি বাংলায় বইটি প্রকাশ করবার দায়ভার তিনি গ্রহণ করেছেন বলে।
বইটি যদি পাঠকদের ভাললাগে তবে অসীম সে আনন্দ, যদি না লাগে সে ত্রুটি কেবল আমারই।
–সঞ্চিতা
ফেব্রুয়ারি ১,২০০৮