আনা ফ্রাঙ্কের ডায়েরি বইয়ের সামারিঃ
আনা ফ্রাঙ্ক নামের এক কিশোরী ১৯৪২ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত নিজের একান্ত দিনলিপিতে লিখে গিয়েছেন ২য় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার অখণ্ড সত্যকে। আনা ১৯২৯ সালে জার্মানিতে জন্মগ্রহণ করেন ১৯৩৩ সালে সপরিবারে তাঁরা জার্মানি ছেড়ে হল্যান্ড এ পাড়ি জমান। সেখানেই বড় হয়ে উঠেন আনা। সেখানেই তাঁর শৈশব কৈশোরের আগাম সময়টা কাটে। কিন্তু তাদের সুদিন বেশি দিন স্থায়ী হয় না, জার্মানির নাৎসি বাহিনী হল্যান্ডেও আক্রমণ চালায়, ফলে তাঁর পরিবার বাধ্য হয় তাদের গোপন আস্তানায় লুকিয়ে পড়ার। লুকিয়ে থাকার সেই সময়টাতে আনা লিখে রেখে যান পরবর্তী ১৯৪২ থেকে ১৯৪৫ এর এপ্রিল পর্যন্ত ঘটে যাওয়া তাঁর প্রতিদিনকার কাহিনী।
কাহিনীতে উঠে আসে একজন শৈশব পেরোনো মেয়ে কীভাবে কিশোরী হয়ে উঠে, কীভাবে সবার মধ্যে থেকেই সবার থেকে আলাদা একাকী তাঁর জীবন বয়ে চলে। তাঁর জীবনের বড় সঙ্গী হয় তাঁর ডায়েরী কিটি। জীবনের বাঁকে একসময় আসে তাঁর প্রেমিক পিটার, তাঁর সাথে কাটানো সময়গুলো উঠে আসে নিবিড় ভাবে। বইটি শেষ হয় ১৯৪৫ এ যখন নাৎসি বাহিনী তাদের ধরে নিয়ে বন্দিশিবিরে আটকে রাখে, সেখানেই ১৫ বছর বয়সে সে মারা যায়। বইটিতে খুব সুন্দর করে একজন ১৩ বছরের মেয়ে কীভাবে প্রতিদিন তাঁর পরিবারে সবার আড়ালে একজন পরিণত মানুষ হয়ে উঠে তা পাওয়া যাবে, আনা প্রচুর বই পড়ে এটাও বেশ চমৎকার, সে এক সময় লেখক হবে সেই স্বপ্ন দেখে। বইটি পড়লে আপনি প্রচন্ডভাবে তাড়িত হবেন, দিনের পর দিন কীভাবে শুধু আলু বা শুধু মটরশুটি খেয়ে পুরো একটা পরিবার বেঁচে থাকে, ধরা পড়ার ভয়ে নির্ঘুম রাত কাটে। সন্তানের সাথে তাঁর বাবা মায়ের অবস্থান, একজন মেয়ে কাছে তাঁর পিতার অবস্থান অনেক স্পষ্ট হবে। ১৩ পার করা সবার জন্য বইটি পড়া আবশ্যক।