”মৈরা পাইবী (দ্য টর্চ বেয়ারার)” বইয়ের প্রথম ফ্ল্যাপ এর লেখা :
ভারতের মণিপুর রাজ্য একটি প্রাচীন জনপদ । এই রাজ্যের অধিবাসীদের নিয়ে লেখা হয়েছে বই ‘মৈরা পাইবী’। ‘মৈরা পাইবী’ অর্থ মশালবাহী। … মৈরা পাইবী’ মণিপুরী নারীদের সংগঠনের নাম । পুরুষতন্ত্রের বিরুদ্ধে এই নারী সংগঠন লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। রাষ্ট্রব্যবস্থার অসাম্যের বিরুদ্ধে একটি জনগোষ্ঠীর যে লড়াই থাকে, মণিপুরীদের এই লড়াইয়ে প্রধান ভূমিকা পালন করেছেন নারীরা। …’মৈরা পাইবী’ ভ্রমণের আঙ্গিকে মণিপুরীদের ইতিহাস-ঐতিহ্যের কথা। দু’জন তরুণ-তরুণীর সংলাপ, বর্ণনা ইত্যাদির মধ্য দিয়ে উঠে এসেছে নানা দিক। একটি রাজ্য এবং সে রাজ্যের জাতিগোষ্ঠীর বিবরণ পাঠককে মুগ্ধ করবে। পাঠকের জানার পরিধি বাড়িয়ে দেবে। মণিপুর রাজ্যের ভূ-প্রকৃতির বর্ণনা চমৎকার। পাহাড়ঘেরা অরণ্য, উপত্যকা, বিচিত্র পথের বাঁক এবং দৃশ্যরাজি এককথায় দারুণ। …আছে মণিপুরীদের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের চিত্র। আছে লোকপুরাণ, কিংবদন্তীর উল্লেখ। মন্দিরের কথা। রাস উৎসবের কথা । নিজস্ব খাওয়া-দাওয়া, শাক-সবজি, ফলমূলের কথা। আছে রাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের কথা। আছে প্রতিরোধী মানুষের মৃত্যুর কথা। ২০০৪ সালে মণিপুরী নারীদের নগ্ন হয়ে প্রতিবাদের কথাও উল্লেখিত আছে। গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে প্রতিবাদ করে এক মণিপুরী যুবক। কালো আইনের হাতে নির্যাতিত হয়ে মৃত্যুবরণ করার চেয়ে নিজের শরীরকে ‘Human Torch’ বানিয়েছিল সেই যুবক। প্রমাণ করেছিল মৃত্যুর মহত্ত্ব।
সেলিনা হোসেন