“কবিতার কী ও কেন” বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ
সর্বসম্মত কোনও বর্ণনা কিংবা সংজ্ঞা না-পাবার যে অসুবিধা, কবিতার আলােচক মাত্রেই কখনও-না-কখনও তার সম্মুখীন হন। তখন কীভাবে তাকে কাটিয়ে উঠবার চেষ্টা করেন তারা? তাদের কেউ-বা কোনও পূর্বাচার্যের দেওয়া সংজ্ঞাকে পুরােপুরি মেনে নিয়ে অতঃপর তারই আলােয় চিনবার চেষ্টা করেন যে, কোনটা কবিতা আর কোনটা নয়। কেউ-বা সেক্ষেত্রে, কোনও পূর্বাচার্যের সংজ্ঞাকে একেবারে পুরােপুরি হয়তাে মেনে নেন না, কিন্তু তারই সূত্র ধরে চেষ্টা করেন অন্য কোনও সংজ্ঞা নির্ধারণের। আবার কেউবা, অন্য-কারও সংজ্ঞার মুখাপেক্ষী-হয়ে, একান্তভাবে অভিজ্ঞতাকে সম্বল করে, অন্য পথে এগিয়ে যেতে চান। চেষ্টা করেন, পূর্বলব্ধ যাবতীয় সংজ্ঞার সঙ্গে সম্পর্কহীন, কোনও নূতন সংজ্ঞা খুঁজে নিতে। কিন্তু সেই নৃতন সংজ্ঞা যখন খুঁজে পাওয়া যায়, তখন তা নিয়েও আবার নূতন করে বিরােধ ঘনিয়ে ওঠে। কাকে কবিতা বলে, এই প্রারম্ভিক প্রশ্নেরই কোনও সর্বজনগ্রাহ্য মীমাংসা আর খুঁজে পাওয়া যায় না। মূলত কবিতার সংজ্ঞা নির্ধারণ ও লক্ষণ নির্ণয়ের এই যে নব-নব প্রয়াস, এবং তার থেকে সঞ্জাত এই যে বিরােধ, এই নিয়েই নানামাত্রিক তত্ত্ব আলােচনা সমালােচনার সন্নিবেশে এই গ্রন্থ। কবিতা কী, কবিতা কেন, কবিতা কোথায়, কবিতা কীভাবে- এই সব চিরন্তন মৌলিক প্রশ্নের সুলুক সন্ধানের প্রয়াস বইটিকে অনন্য করে তুলেছে। কবিতার কী ও কেন নিয়ে অনুপুঙ্খ এই সমৃদ্ধ রচনা কবি, কবিতার পাঠক এবং সাহিত্যের শিক্ষকদের জন্য একটি জরুরী গ্রন্থ হিসেবে নন্দিত হবে নিঃসন্দেহে।